বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
জমিদার বাড়ি রহস্য
৯ম এবং শেষ পর্ব
RN Efti
জমিদার বাড়ি থেকে বের হচ্ছি এমন সময় রিও হেসে দিয়ে মিস্টার আমিন কে বললঃওহ হ্যা মিস্টার আমিন, বন্দুকের নিশানা কিন্তু দারুন আপনার।
মিস্টার আমিন দেখলাম অবাক হয়ে রিওর দিকে তাকিয়ে রইল।
রিও তাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বললঃ যাক সে কথা,
আমি সব ভুলে গেছি।
আপনিও ভুলে যান সব।
শুভ বিদায়।
_______ ভাগিনার এহেন আচরণ দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
তবে বুঝলাম রিওকে আক্রমন নিয়ে কিছু করতে গেলে
নিছক আমাদের কোর্টে যেতে হবে।
তারপর বিচার।
রিও বলে আমার এক একটা দিনের অনেক মুল্য আছে।
কারন আমাকে আল্লাহ যে জ্ঞান দিয়েছেন সেটা সঠিক
কাজে ব্যবহার না করে
যদি নিজের জন্য ব্যয় করি।
তাহলে শেষ বিচারের দিন
শ্রষ্ঠার কাছে
কি জবাব দিব।
তাই আর আমিনের বিষয়টা এগোল না।
আমি অবশ্য চেয়েছিলাম।
কিন্তু মাঝ পথে রিওই আমায় থামিয়ে দিয়েছিল।
তিন দিন পর।
আমি আর রিও বসে আছি
রিওদের গ্রামের বাড়িতে।
এমন এক সন্ধায় ওসি সাহেব আর সাফিন এসে হাজির।
চা খেতে খেতে এক পর্যায়ে
ওসি সাহেব বললেনঃ মালি নাকি সব স্বীকার করে নিয়েছে।
তিনি আরো বললেনঃআচ্ছা মিস্টার রিও আপনি কি করে বুঝলেন এত কিছু?
হাসতে হাসতে রিও বললঃদেখুন মিস্টার। যখন মিসেস জোহান আমার ৯৩/২
এর বাড়িতে গেলেন।
তখনি তার কথার মাঝে
কিছু গোলমাল লক্ষ্য করি।
কারন তার মুখে স্পস্ট ভুতের ভয় ছিল।
এ কারনে আমি আসতে রাজি হই।
আর যখন শুনলাম তিনি খুন হয়েছেন তখন আসতে বাধ্য হলাম।
এসে ঘর পরিক্ষা করে যেটা পেলাম সেটা নিতান্তই সাজানো জিনিস।
তবে স্বীকার করতেই হবে
খুনি এই একটি জায়গায় আমাকে চমক দেখিয়েছে।
কারন আমার অনুমান থেকে
খুনির বয়স অনেক বেশি ছিল।
তবে হ্যা আমি যে জুতার মাপ পেয়েছিলাম সেটা মালির নয়
জহিরের।
তবে চুল মালির।
আমার ভুল ছিল আমি দুই জনকেই একজন মনে করে
ফেলেছিলাম।
কি আর করব বলুন
ইনভেস্টিগেশন একটু ভুল হলে
সম্পুর্ন মামলাটা যে বদলে যায়।
সেটা এই মামলা থেকে শিখে নিয়েছি।
আশা করি এমন ছেলে মানুষি ভুল আমার আর হবে না।
কাজের কথায় আসি, যখন দেখলাম ভিকটিমের গায়ে বাঘের থাবার মত ছাপ।
তখন ভেবে নিলাম মারার অস্ত্রটা এই ঘরেই আছে।
কারন জমিদার বাড়িতে সে সব আসবাব পত্র আছে
তার সব গুলোয় আগের যুগের
ভিন্ন প্রানির আদলে তৈরি।
একটু খুজতে পেয়ে গেলাম
চেয়ারের হাতল যেটা বিশেষ কায়দা করে বানানো।
সহজে খুলে নেওয়া যায়।
কিন্তু ঘর ময় একটা পায়ের ছাপ ছিল।
তাই বলে বলেছিলাম খুনি খুন করতে নয়,,অন্য উদ্দেশ্য এসেছিল।
কারন খুন করতে আসলে
খুন করে চলে যেত।
এত দেরি করত না।
আমি বললামঃহ্যান্ড গ্লাভসের আংশ বিশেষ পেয়েছিলে কেন?
_আসলে প্রফেসর। খুন হয়েছিল সাড়ে এগারটার কিছু আগে।
কিন্তু সবাই জানল রাত দুটা
কেন?
কারন অনেক প্রমান ছিল ঘরে।
সেটা মালি লুটপাট করার সময় এই গ্লাভস পরে নিয়েছিল।
কিন্ত তিনি জানতেন না রিও আসবে এখানে।
যদি জানত তাহলে ইন্ডিয়া বেশি দূরে ছিল না।
এখন খেয়াল করলে বুঝবে
রাত দুটায় একটা শব্দ হল।
আর সে সব্দ পেয়ে কমলা আর তার স্বামী উঠে এল।
কিন্তু খুন হল সাড়ে এগারটায়
শব্দ তখন কেন?
কে করল এ শব্দ?
তা হলে ভেবে নেওয়া কি কঠিন যে খুনি এই শব্দ করে ছিল।
তাই ভাবলাম খুনি এ বাড়িতে আছে বা ছিল রাত দুটা পর্যন্ত।
এবার দারোয়ানের সাথে কথা বলে ভুতের গল্প শুনতে পেলাম।
কিন্তু মিসেস জোহানের গল্পের সাথে তার গল্প মিলে না।
তাই দারোয়ানের কথা আমার বিশ্বাস হল না।
এবার তাই আবার এই জমিদার বাড়িতে আসি।
তখন পেয়ে যাই ভিন্ন তথ্য।
জহির বলেছিল সে বাঘের গর্জন শুনেছিল এবং দারোয়ান আর মালির সাথে গিয়ে ছিল দেখতে।
কিন্তু কথা হল দারোয়ান তাহলে জহির সাথে ছিল এ কথা চেপে গেল কেন?
নিশ্চয় এই দুইটার মাঝে সাদৃশ্য আছে।
তাই তোমার অরন্যকে সেই রাতেই যশোর পাঠিয়ে দেই।
জহির সম্পর্কে যা বলেছি সব
অরন্যর দেওয়া তথ্য।
খুনের সমাধান করেই ফেলেছিলাম অরন্যর দেওয়া তথ্য থেকে।
কিন্তু যার জন্য খুন হল সেই গুপ্ত ধন কোথায়?
ডাইরি ঘেটে একটা তথ্যই পেয়েছিলাম।
তা হল “গুপ্ত ধনে ভয় আছে”।
যখন এই একটা বাক্য নিয়ে ভেবে ভেবে মাথা হ্যাং হয়ে আসছিল তখন একটা বিষয় দেখে একটু চমক লাগল।
তা হল সবাই বাংলাতে বাক্যটা লিখলেও
সর্ব প্রথম যিনি কথাটা লিখেছিলেন তিনি লিখেছেন
ইংরেজিতে।
সেটা হলঃGupTo dhOn_A voy ache.
একটু খেয়াল করে দেখলাম
এখানে চারটা ক্যাপিটাল আক্ষর আছে।
তা হল GTOA.
কিন্তু gtoa এর কোন আর্থ নাই।
তাই লিখাটাতে একটু উল্টাতে পেলাম toga।
যার মানে দাড়াই আলখেল্যা।
এটা প্রাচিন রোমানদের একটা পোষাক বিশেষ।
কিন্তু এই পোশাক পরে ভুত সেজে ভয় দেওয়ার কি আছে?
ভালকরে ডাইরি আবার পড়ে
এই পোশাক এর কোন ছিটে ফোটা ডাইরিতে পেলাম না।
কি আর করা আবার উল্টাতে শুরু করলাম আক্ষর গুলো।
এবার পেলাম Goat মানে ছাগল।
মাথায় খেলে গেল একটা জিনিস।
নীল ক্ষেত থেকে জমিদার বাড়ি সম্পর্কে যে বইটা কিনেছিলাম।
সেটায় লেখাছিল প্রাচিন এই জমিদারেরা ছাগদুগ্ধ পছন্দ করতেন।
কিন্তু অকারনে এক রাতের মাঝে সব ছাগল মারা যায়।
এবং তাদের এই জমিদার বাড়িতেই পুতে ফেলে
সেখানে একটা ছাগলের মুর্তি করে রাখা হয়।
কিন্তু কেন?
একরাতেই কেন?
কি রোগ হতে পারে যে, একরাতে সব ছাগল মারা যায়।
আবার সেগুলি কেন রাতেই পুতে রাখা হয়?
কেন আবার ছাগল কেনা হয় না?
সমস্যার কোন সমাধান পাচ্ছিলাম না।
তখন মনে হল পরিকল্পিত ভাবেই ছাগলগূলো মারা হয়।
এবং সেটার সাথে সাথে গুপ্তধনও পুতে দেওয়া হয়।
আমি বললামঃ নিজের সম্পদ পুতে রাখার কি কারন থাকতে
পারে? ভাগিনা।
_কারনতো আছেই প্রফেসর।
ঠিক ওই সময়টাতে ব্রিটিশকোম্পানি গুলো এ দেশে আগমন করে।
হয়ত জমিদারের ধারনা ছিল
ব্রিটিশরা তার এই জিনিসের উপর লোভ দেখাতে পারে।
এতক্ষনে সাফিন মুখ খুললঃসত্য বলতে কি মিস্টার রিও।
গোয়েন্দা বই পড়েছি।
নিজেও এত গুলো কেসের সমাধান করেছি।
কিন্তু আপনার কাজের স্টাইল আমায় মুগ্ধ করে দিয়েছে।
মাত্র সীমিত কিছু তথ্য দিয়ে আপনি এমন বড় এবং জটিল কেসের সমাধান যে, কি ভাবে করলেন?
আল্লাহ আপনাকে কঠিন ট্যালেন্ট দিয়েছে।
_ট্যালেন্ট কি না জানি না; বলল রিও।তবে এটা মানতেই হবে আমার দেখার ক্ষমতা আল্লাহ অনেক ভাল দিয়েছে।
_কিন্তু মিস্টার রিও, বললেন ওসি সাহেব। আপনার উপর যে আক্রমন হল সেটার কিছু করলেন না যে?
_বেচে আছি এটাই শুকরিয়া নয় কি? বলল রিও।
_কিন্তু অপরাধী?
_সে না হয় বাহিরেই থাক।
_তারমানে আপনি বলছেন জহির আপনার উপর আক্রমন করেনি?ওসির প্রশ্ন।
_জি হ্যা।
তবে এত টুকু জেনে রাখেন।
যিনি আক্রমন করেছিলেন
তিনি ভেবেছিলেন আমি জহিরের হয়ে এখানে এসেছি।
তাই চেয়েছিলেন আমাকে সরিয়ে দিতে।
_তার মানে আমিন জোহান? অবাক হয়ে ওসির প্রশ্ন।
_আরে ছেড়ে দিননা এসব।
আসেন চা খাই আর এককাপ।
_আপনি জনাব, আসলেই যে কি?
এটাই বুঝলাম না।
_হা হা হা, আমিও একজন মানুষ।
(সমাপ্ত)
[পাঠকদের কাছে আবার ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এবং সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য্য নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য]
#কানাবেল
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now